Tuesday, January 17, 2017

চার বর্ণের অশৌচ ব্যবস্থা নিয়ে শাস্ত্রীয় রেফারেন্স

চার বর্ণেরঅশৌচ ব্যবস্থাঃ
  
চার বর্ণের অশৌচ ব্যবস্থা
চার বর্ণের অশৌচ ব্যবস্থা  


বর্তমান সময়ে “সর্ববর্ণে দশাহ অশৌচ” পালন নিয়ে একটা বিতর্ক সব জায়গাতেই দেখা যাচ্ছে ।অশৌচ কাল সর্ববর্ণের জন্য দশদিন না যুগ যুগ ধরে বর্ণ অনুসারে দশ,বার,পনের ও ত্রিশ দিন হবে তা নিয়ে আমাদের অঞ্চলে বেশ কয়েকটি সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে ।কোন কোন পন্ডিত অভিমত দিচ্ছেন যে, সর্ববর্ণে দশাহ অশৌচই শাস্ত্র সিদ্ধান্ত ,যদিও অধিকাংশ পন্ডিত তার বিরোধিতা করছেন। এতে সাধারন মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে।সমাজ দর্পণ পত্রিকা কয়েক বছর ধরে জোরালোভাবে এ সম্পর্কে নিয়মিত প্রচার চালাচ্ছে এবং এটা যে শাস্ত্রসম্মত তা প্রমাণের জন্য কিছু শ্লোক উদ্ধৃত করে প্রবন্ধও প্রকাশ করেছে।আমি সমাজ দর্পণের একজন নিয়মিত পাঠক।বর্তমান সময়ে সনাতন কৃষ্টির প্রচারে সমাজ দর্পণ বিশেষভাবে কাজ করে যাচ্ছে।কিন্ত “সর্ববর্ণে দশাহ অশৌচ পালন” বিষয়ে সমাজ দর্পণের প্রচারের বিষয়ে আমার মতামত ব্যক্ত করতেই এই লেখা।আমি অত্যন্ত বিনয়ের সাথে এ বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশ করছি এবং অশৌচ বিষয়ে সনাতন শাস্ত্রের অভিমত প্রকাশের জন্য এ প্রবন্ধ লিখছি।
সকলের জন্য ১০ দিনেই অশৌচ বিধান এবং ১১ দিনে শ্রাদ্ধ করার বিধান দিতে গিয়ে সমাজ দর্পণে সর্বমোট তিনটি শ্লোক উদ্ধৃত করা হয়েছে।সেগুলো হলোঃ
১)মনুসংহিতার উদ্ধৃতিঃ দশাহং শাবমাশৌচং সপিন্ডেষু বিধীয়তে |
অর্বাক সঞ্চয়নাদস্থাং ত্রহেমেকাহমেব চ ||(মনুসংহিতা ৫|৫৯)
অর্থঃ সপিন্ডের মৃত্যু হলে দশাহ(দশদিন)অশৌচ হবে এবং গুণের তারতম্য অনুসারে চারদিন অথবা তিনদিন অথবা এক অহোরাত্র মাত্র অশৌচ বিহিত।
২)গরুড় পুরাণের উদ্ধৃতিঃ একাদশায়ে প্রেতস্য যস্যোৎ সৃজ্যোত নো বৃষ |
প্রেতত্বং সুস্থিতং তস্য দত্তৈ শ্রাদ্ধশতৈরপি ||(গরুড় পুরাণ,উত্তরখন্ড ৬|৪০)
অর্থঃ যে প্রতের উদ্দেশ্যে একাদশাহে বৃষোৎসর্গ না হয় তাহার উদ্দেশ্যে শত শত শ্রাদ্ধ করলেও তার প্রতত্ব বিমুক্ত হয় না।
৩)বরাহ পুরাণের উদ্ধৃতিঃ ‘দশাহং শাবমাশৌচং সপিন্ডেষু বিধীয়তে
জননেহপ্যেমেব সান্নিপুনং শুদ্ধি মিচ্ছাতাম ||(বরাহ পুরাণ ১৮৮|১-৭)
অর্থঃ ‘একাদশ দিনে যথাবিধি একোদ্দিষ্ট বিধিক পিন্ড দান করিবে।মনুষ্যগণের মধ্যে বিপ্র,ক্ষত্রিয়,বৈশ্য বা শূদ্র এই চারিবর্ণের একোদ্দিষ্ট বিধি একরূপ।
পাঠক একটু খেয়াল করে দেখুন উপরোক্ত শ্লোকগুলির কোথাও স্পষ্ট এবং সরাসরি বলা নেই যে, “সর্ববর্ণে দশাহ অশৌচ হইবে”!!!!!
আরেকটা মজার ব্যপার হলো বরাহ পুরাণের যে শ্লোকটি(১৮৮|১-৭) দেয়া হয়েছে তার সংস্কৃত শ্লোকের সাথে বাংলা অর্থের(যা দেয়া হয়েছে) মিল নাই এবং ঐরূপ কোন শ্লোক বরাহ পুরাণে নেই!! তবে যে বাংলা অর্থ দেয়া হয়েছে তা বরাহ পুরাণে আছে এভাবেঃ
একাদশে চ দিবসে একোদ্দষ্ট যথাবিধি
………………………………………………..
একোদ্দিষ্টং মনুষ্যাণাং চাতুর্বর্ণস্য মাধবি বরাহ পুরাণ (১৮৮|৫,৭)
দেখা গেল একটি শ্লোকের প্রথম লাইন এবং তার পরের আরেকটি শ্লোকের আরেক লাইন নিয়ে সমাজ দর্পণে প্রকাশিত হয়েছে।কাজেই এটার বিষয় পাঠককুল বিবেচনা করুন।
এবার দেখা যাক অশৌচ কাল বিষয়ে সনাতন শাস্ত্রে স্পষ্ট এবং সরাসরিভাবে কি বলা হয়েছেঃ
|| মনু সংহিতার বিধান ||
শুধ্যেদ্বিপ্রো দশাহেন দ্বাদশাহেন ভূমিপঃ |
বৈশ্যঃ পঞ্চদশাহেন শূদ্রো মাসেন শুধ্যতি || (মনুসংহিতা ৫|৮৩)
অর্থঃ ব্রাহ্মণ দশদিন,ক্ষত্রিয় দ্বাদশ দিন,বৈশ্য পঞ্চদশদিন এবং শূদ্রর ত্রিশ দিনে শুদ্ধ হয়।
|| অত্রি সংহিতা ||
ব্রাহ্মণো দশরাত্রেণ দ্বাদশাহেন ভূমিপঃ |
বৈশ্যঃ পঞ্চদশাহেন শূদ্রো মাসেন শুধ্যতি || (অত্রি সংহিতা,৮৫ নং শ্লোক)
অর্থঃ ব্রাহ্মণ দশদিনের পর,ক্ষত্রিয় দ্বাদশ দিনের পর,বৈশ্য পঞ্চদশ দিনের পর ও শূদ্র একমাসের পর শুদ্ধ হয়।
|| বিষ্ণু সংহিতা ||
ব্রাহ্মণস্য সপিন্ডানাং জননমরণয়োর্দ্দশাহমাশৌচম ||
দ্বাদশাহং রাজন্যস্য || মাস শূদ্রস্য || (বিষ্ণু সংহিতা ২২|১-৩)
অর্থঃ সপিন্ডদিগের জন্ম মরণে ব্রাহ্মণের দশদিন,ক্ষত্রিয়ের দ্বাদশাহ,বৈশ্যের পঞ্চদশাহ এবং শূদ্রের একমাস অশৌচ কাল।
|| যাজ্ঞবাল্ক্য সংহিতা ||
ক্ষত্রস্য দ্বাদশাহানি বিশঃ পষ্ণদশৈব তু |
ত্রিংশদ্দিনানি শূদ্রস্য তদর্দ্ধং ন্যায়বর্ত্তিনঃ || (যাজ্ঞবাল্ক্য সংহিতা ৩|২২)
অর্থঃ ক্ষত্রিয়ের পূর্ণাশৌচ বার দিন,বৈশ্যের পনের দিন এবং শূদ্রের একমাস।
|| উশনঃ সংহিতা ||
শুধ্যেদ্বিপ্রো দশাহেন দ্বাদশাহেন ভূপতিঃ |
বৈশ্য পঞ্চদশাহেন শূদ্রো মাসেন শুধ্যতি || (উশনঃ সংহিতা ৬|৩৪)
অর্থঃ ব্রাহ্মণ দশদিন,ক্ষত্রিয় দ্বাদশ দিন,বৈশ্য পঞ্চদশদিন এবং শূদ্রর ত্রিশ দিনে শুদ্ধ হয়।
|| অঙ্গিরা সংহিতা ||
দশাহাচ্ছুধ্যতে বিপ্রো দ্বাদশাহেন ভূমিপঃ |
পাক্ষিকং বৈশ্য এবাহ শূদ্র মাসেন শুধ্যতি || (অঙ্গিরা সংহিতা ৫১ নং শ্লোক)
অর্থঃ ব্রাহ্মণ দশদিন,ক্ষত্রিয় দ্বাদশ দিন,বৈশ্য পঞ্চদশদিন এবং শূদ্রর ত্রিশ দিনে শুদ্ধ হয়।
|| সংবর্ত্ত সংহিতা ||
বিপ্রো দশহমাসীত দানধ্যায়নবর্জ্জিতঃ |
ক্ষত্রিয় দ্বাদশাহেন বৈশ্য পঞ্চদশৈব তু ||
শূদ্রঃ শুধ্যতি মাসেন সাংবর্ত্তবচং যথা || (সংবর্ত্ত সংহিতা ৩৮ নং শ্লোক)
অর্থঃ জনন বা মরণে ব্রাহ্মণ দান অধ্যয়ণ বর্জ্জনপূর্বক,ক্ষত্রিয় দ্বাদশ দিন,বৈশ্য পঞ্চদশদিন এবং শূদ্রর ত্রিশ দিনে শুদ্ধ হইবে;ইহাই সংবর্ত্ত মুনির অনুজ্ঞা জানিবে।
|| পরাশর সংহিতা ||
জাতো বিপ্রো দশাহেন দ্বাদশাহেন ভূমিপঃ |
বৈশ্যঃ পঞ্চদশাহেন শূদ্রো মাসেন শুধ্যতি || (পরাশর সংহিতা ৩|৪)
অর্থঃ জনন বা মরণ হইলে ব্রাহ্মণ দশদিন,ক্ষত্রিয় দ্বাদশ দিন,বৈশ্য পঞ্চদশদিন এবং শূদ্রর ত্রিশ দিনে শুদ্ধ হয়।
|| শঙ্খ সংহিতা ||
সপিন্ডতা তু পুরুষে সপ্তমে বিনিবর্ত্ততে |
জননে মরণে বিপ্রো দশাহেন বিশুধ্যতি ||
ক্ষত্রিয় দ্বাদশাহেন বৈশ্য পক্ষেণ শুদ্ধতি |
মাসেন তু তথা শূদ্রঃ শুদ্ধিমাপ্নোতি নান্তরা || (শঙ্খ সংহিতা ১৫|২-৩)
অর্থঃ সপিন্ড জ্ঞাতির জননে বা মরণে ব্রাহ্মণ দশাহ অশৌচ ভোগ করিয়া শুদ্ধ হয়;ক্ষত্রিয় দ্বাদশাহ;বৈশ্য পঞ্চদশাহ এবং শূদ্র একমাস অশৌচ ভোগ করিয়া শুদ্ধ হয়।
|| দক্ষ সংহিতা ||
জাতিবিপ্রো দশাহেন দ্বাদশাহেন ভূমিপঃ |
বৈশ্যঃ পঞ্চদশাহেন শূদ্রো মাসেন শুধ্যতি || (দক্ষ সংহিতা ৬|৭)
অর্থঃ জনন বা মরণ হইলে ব্রাহ্মণ দশদিন,ক্ষত্রিয় দ্বাদশ দিন,বৈশ্য পঞ্চদশদিন এবং শূদ্রর ত্রিশ দিনে শুদ্ধ হয়।
|| গৌতম সংহিতা ||
……… ক্ষত্রিয়স্য দ্বাদশ রাত্রং বৈশ্যস্যার্দ্ধমাসমেকং শূদ্রস্য ||গৌতম সংহিতা ১৪ অধ্যায়)
অর্থঃ ক্ষত্রিয়ের দ্বাদশ রাত্র;বৈশ্যের পঞ্চদশ এবং শূদ্রের একমাস অশৌচ হয়।
|| কূর্ম্ম পুরাণ ||
শুধ্যেদ্বিপ্রো দশাহেন দ্বাদশাহেন ভূমিপঃ |
বৈশ্যঃ পঞ্চদশাহেন শূদ্রো মাসেন শুধ্যতি || (কূর্ম্ম পুরাণ,উপরিভাগ ২৩|৩৮)
অর্থঃ ব্রাহ্মণ দশদিন,ক্ষত্রিয় দ্বাদশ দিন,বৈশ্য পঞ্চদশদিন এবং শূদ্রর ত্রিশ দিনে শুদ্ধ হয়।
|| লিঙ্গ পুরাণ ||
অনন্তর ব্রাহ্মণের দশাহে শুদ্ধি হয়………….।ক্ষত্রিয়ের দ্বাদশ দিন সম্পূর্ণাশৌচ……….
………।………বৈশ্যের পঞ্চদশ দিনে ও শূদ্রের একমাস সম্পূর্ণাশৌচ।(লিঙ্গ পুরাণ,পূর্বভাগ ৮৯ অধ্যায়)
|| মার্কন্ডেয় পুরাণ ||
দশাহং ব্রাহ্মণস্তিষ্ঠেদ্দানহোমাদিবর্জ্জিতঃ |
ক্ষত্রিয় দ্বাদশাহঞ্চ বৈশ্য মাসার্দ্ধমেব চ ||
শূদ্রস্ত্ত মাসামাসীত নিজকর্ম্মবিবর্জ্জিত |
ততঃ পরং নিজ কর্ম্ম কুর্য্যুঃ সর্ব্বে যথেস্পিতম ||(মার্কন্ডেয় পুরাণ ৩৫|৪০,৪১)
অর্থঃ জননাশৌচ ও মরণাশৌচে বিপ্রগণ দশদিন যাবৎ দান হোমাদি নিজ কর্ম্ম-বর্জ্জিত অবস্থিতি করিবেন এবং ক্ষত্রিয় দ্বাদশ দিন,বৈশ্যেরা পঞ্চদশ দিন ও শূদ্রগণ একমাস যাবৎ ঐ রূপ আচরণে থাকিবে।তৎপরে সকলেই শাস্ত্রোক্ত বিধানে স্ব স্ব কর্ম্মের অনুষ্ঠান করিবে।
## এ সম্পর্কে আরো বলা আছেঃ
দশদ্বাদশমাসার্দ্ধ-মাসসংখৈর্দিনৈগতৈঃ |
স্বাঃ স্বাঃ কর্ম্মক্রিয়াঃ কুর্য্যুঃ সর্বে বর্ণা যথাবিধি || (মার্কন্ডেয় পুরাণ ৩৫|৫১)
অর্থঃ ব্রাহ্মণাদি যাবতীয় বর্ণই বিধান অনুসারে দশদিন,দ্বাদশদিন,পক্ষ ও একমাস অবলম্বন পূর্বক নিজ নিজ বর্ণ বিহিত কার্য্যাদি সমাধা করিবে।
|| বিষ্ণু পুরাণ ||


বিপ্রস্যৈতদ্ দ্বাদশাহং রাজন্যস্যপ্যশৌচকম্ |
অর্দ্ধমাসশ্চ বৈশ্যস্য মাসঃ শূদ্রস্য শুদ্ধয়ে || (বিষ্ণু পুরাণ,তৃতীয়াংশ ১৩|১৯)
অর্থঃ ব্রাহ্মণের অশৌচ দশদিন,ক্ষত্রিয়ের দ্বাদশ,বৈশ্যের পঞ্চদশ এবং শূদ্রের অশৌচ একমাস।
পাঠককুল এবার আসুন গরুড় পুরাণে।দেখা যাক গরুড় পুরাণ কি বলে।
|| গরুড় পুরাণ ||
সোজাভাবে বলছেঃ শুচির্বিপ্রো দশাহেন ক্ষত্রিয় দ্বাদশাহত |
বৈশ্যঃ পঞ্চদশাহেন শূদ্রো মাসেন শুধ্যতি || (গরুড় পুরাণ,পূর্ব্বখন্ড ২২৬|৩৮)
অর্থঃ জননাশৌচ ও মরণাশৌচ উপস্থিত হইলে ব্রাহ্মণ দশদিন,ক্ষত্রিয় দ্বাদশ দিন,বৈশ্য পঞ্চদশদিন এবং শূদ্রর ত্রিশ দিনে শুদ্ধ হয়।
আবার বলছেঃ
জাতিবিপ্রো দশহাত্তু ক্ষত্রো দ্বাদশকাদ্ দিনাৎ |
পঞ্চদশাহাদ্বৈশ্যস্ত্তু শূদ্র মাসেন শুধ্যতি || (গরুড় পুরাণ,পূর্ব্বখন্ড ১০৭|১১)
অর্থঃ যিনি জাতি মাত্রে বিপ্র তিনি দশদিন,যিনি জাতি মাত্রে ক্ষত্রিয় তিনি দ্বাদশ,যিনি জাতি মাত্রে বৈশ্য পঞ্চদশ এবং যিনি জাতি মাত্রে শূদ্র তিনি একমাসে শুদ্ধ হন।
আরো দেখুনঃ
দশাহং প্রাহুরাশৌচং সপিন্ডেষু বিপশ্চিতঃ |
মৃতেষু বাথ জাতেষু ব্রাহ্মণানাং দ্বিজোত্তমা ||
ক্ষত্রিয়ো দ্বাদশাহেন দশভিঃ পঞ্চভভির্বিশঃ |
শুধ্যেন্মাসেন বৈ শূদ্রো যতীনাং নাস্তি পাতকম্ || (গরুড় পুরাণ,পূর্ব্বখন্ড ৫০|৮১,৮৩)
অর্থঃ ব্রাহ্মণের জন্ম-মরণে জ্ঞাতিবর্গের দশাহ অশৌচ হয়।প্রাচীন পন্ডিতগণ ইহা বলিয়া থাকেন।ক্ষত্রিয়ের জন্ম-মরণে জ্ঞাতিবর্গের দ্বাদশাহে;বৈশ্যের পঞ্চদশাহ ও শূদ্রের একমাস অশৌচ হয়।
|| পদ্ম পুরাণ ||
দশাহং শাবমাশৌচং ব্রাহ্মণস্য বিধিয়তে |
ক্ষত্রিয়েষু দশ দ্বে চ পক্ষং বৈশ্যেষু চৈব হি ||
শূদ্রেষু মাসামাশৌচং সপিন্ডেষু বিধিয়তে || (পদ্ম পুরাণ,সৃষ্টি খন্ড ১০|২,৩)
অর্থঃ শাবাশৌচ ব্রাহ্মণের অশৌচ দশদিন;ক্ষত্রিয়ের দ্বাদশদিন;বৈশ্যের পঞ্চদশ এবং শূদ্রের একমাস হইবে।
|| ব্রহ্ম পুরাণ ||
দশাহং ব্রাহ্মণস্তিষ্ঠেদ্দানহোমবিবর্জ্জিতঃ |
ক্ষত্রিয়ো দ্বাদশাহঞ্চ বৈশ্য মাসার্দ্ধমেব চ ||
শূদ্রশ্চ মাসামাসীত নিজকর্ম্মবিবর্জ্জিত || (ব্রহ্ম পুরাণ ২২১|১৪৭,১৪৮)
অর্থঃ জন্ম ও মরণ উপলক্ষে ব্রাহ্মণ দশদিন;ক্ষত্রিয় দ্বাদশদিন;বৈশ্য মাসার্দ্ধ যাবৎ দান হোম বর্জ্জনপূর্ব্বক থাকিবে।শূদ্র একমাস নিজ কর্তব্য বর্জ্জন করিবে।
|| অগ্নি পুরাণ ||
দশা হাচ্ছদ্ধ্যতে বিপ্রো দ্বাদশাহেন ভূমিপঃ |
বৈশ্যঃ পঞ্চদশাহেন শূদ্রো মাসেন শুধ্যতি || ( অগ্নি পুরাণ ১৫৮|১২ )
এরকম আরো বহু শ্লোক উদ্ধৃত করে অশৌচকাল সম্পর্কে ঋষিগণের কি অভিমত তা সুস্পষ্টভাবে দেখানো সম্ভব।পূর্বেই উল্লেখ করেছি সনাতন শাস্ত্রের কোথাও বলা নেই “সর্ববর্ণে দশাহ অশৌচ হইবে”।সমাজ দর্পণে যে ৩ টি শ্লোক উদ্ধৃত করা হয়েছে তাতেও সরাসরি এমন কথা বলা হয় নাই।এবং আমি দেখিয়েছি মনু সংহিতায় এবং গরুড় পুরাণে কিভাবে অশৌচ বিধি বলা হয়েছে।কাজেই বর্ণভেদে অশৌচকালের পার্থক্য হয় এটাই শাস্ত্র সিদ্ধান্ত।আর আমরা বিশ্বাস করি ঋষিপ্রণিত বিধান মানাই সর্বৈব বিধেয়।আর তা না করে কেউ নিজেদের খেয়াল মতো চললে তা অনুসরণ না করাই শ্রেয়।লেখার শিরোনামটার জবাব এবার আপনারাই বিচার করুন।ঈশ্বর সকলের মঙ্গল করুন।                
                         

1 comment:

Unknown said...

খুব সুন্দর হয়েছে দাদা।

Ekadoshi

তর্পণ বিধি

 আমি প্রথমেই মহালয়া বিষয়ে দু'একটা কথা বলে নিই, তারপর  তর্পণ নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করবো।  মহালয়া মানে শুধু মায়ের আগমন নয়, মহাল...

চারবর্ণের অশৌচ ব্যবস্তা