Thursday, September 8, 2022

ব্রাহ্মণাদি বর্ণসমূহের বিভাগ জন্মের দ্বারা মান্য করা কি উচিত , নাকি কর্মের দ্বারা ?

 শ্রীমদ্ভাগবত গীতার পঞ্চম অধ্যায়ের ১৩নং শ্লোকের  তাৎপর্য নিয়ে সংক্ষিপ্ত  আলোচনা----


ব্রাহ্মণাদি বর্ণসমূহের বিভাগ জন্মের দ্বারা মান্য করা কি উচিত , নাকি কর্মের দ্বারা ?

-------------------------------------------------------------------


উত্তর ---যদিও জন্ম আর কর্ম দুইই বর্ণের অঙ্গ 

হওয়ায় বর্ণের পূর্ণতা তো ঐ দুই থেকেই হবে । কিন্তু

প্রাধান্য হয় জন্মের জন্যই । এই  জন্য জন্ম হতেই 

ব্রাহ্মণাদির বর্ণ বিভাগ মানা উচিত । কেননা এই 

দুইয়ের মধ্যে প্রাধান্য তো জন্ম হতেই হয় । যদি মাতা-পিতা একই বর্ণের হন, এবং কোনও প্রকারেই জন্মে  ,সঙ্করতা না আসে, তাহলে  সহজে কর্মেও সঙ্করতা প্রায়ই আসে না।  কিন্তু সঙ্গদোষ,আহার দোষ এবং দূষিত  শিক্ষা-দীক্ষাদির কারণে কর্মে কখনও কিছু  ব্যতিক্রম যদিও হয়ও , তাহলেও 

জন্ম হতে বর্ণ মেনে  নিলে বর্ণ রক্ষা হতে পারে । তবুও কর্মশুদ্ধির  প্রয়োজন কম নয় ।  কর্ম  সর্বতোভাবে  বিনষ্ট হলে বর্ণের  রক্ষা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে ।  এইজন্য জীবিকা ও বিবাহ  আদিতে  তো জন্মের  প্রাধান্য এবং কল্যাণপ্রাপ্তির  জন্য কর্মের প্রাধান্য  মানতে হবে । কেননা,  জাতিতে

 হবার পরও যদি কর্ম ব্রাহ্মণোচিত  না হয়, তাহলে 

তার কল্যাণ হতে পারে না এবং সামান্য ধর্মের অনুসারে শম-দমাদি  পালনকারী এবং শুদ্ধ  আচরণশীল শূদ্রও  যদি ব্রাহ্মণোচিত যজ্ঞাদি কর্ম 

করতে থাকে এবং  তার দ্বারা  নিজের জিবিকা নির্বাহ  করে, তাহলে  সেও পাপের ভাগী হবে।


 বর্তমান সময়ে  যখন বর্ণ ব্যবস্থা বিনষ্ট হয়ে গেছে, তখন জন্ম দ্বারা বর্ণ না মেনে মানুষের আচরণ  অনুসারে তার বর্ণ মেনে নিলে ক্ষতি কি ?

--------------------------------------------------------------------


উত্তর---এইটি মানা উচিত নয় , কেননা প্রথমতঃ  বর্ণ ব্যবস্থাতে  কিছু শৈথিল্য এলেও , তা নষ্ট হয়ে যায়নি ।   দ্বিতীয়তঃ জীবকে কর্মফল  ভোগের জন্য ঈশ্বরই তাদের পূর্ব  কর্মানুসারে বিভিন্ন  বর্ণ জন্মদান করেন । ঈশ্বরের  বিধানকে পাল্টে  দেবার 

 অধিকার  মানুষের নাই । তৃতীয়তঃ, আচরণ  দেখে 

বর্ণের কল্পনা  কারও অসম্ভব । একই মাতাপিতার 

 সন্তান ভিন্ন  আচরণ বা স্বভাবের হয় । একই মানুষ  সারা দিনে  কখনও  ব্রাহ্মণের মত, আবার কখনও শূদ্রের মত আচরণ ও  কর্ম সম্পাদন করে । এমতাবস্থায়  বর্ণের  নির্ধারণ  বা নিশ্চয়  কি করে ? আবার এই রকম হলে  কে আর নীচে  যেতে চাইবে ? পান ভোজন  এবং বিবাহ ক্ষেত্রে সঙ্কট উৎপন্ন হবে , ফলে  বর্ণবিপ্লব  হয়ে যাবে এবং 

বর্ণব্যবস্থার স্থিতিতে  অন্যান্য কঠিন বাধা  উপস্থিত

 হবে । এইসব কারণে কর্ম হতে  বর্ণ নির্ণয়  সম্ভব নয় । ভগবান শ্রীকৃষ্ণের  অভিপ্রায়ও এমন নয় ।

 ব্রাহ্মণোচিত সর্বগুণ থাকা সত্বেও ভীষ্ম, বিদুর 

প্রভৃতি  মহান ব্যক্তিগণ ক্ষত্রিয় থেকে ব্রাহ্মণ পদে

উন্নীত হন নাই ।





যদি এবিষয়ে আরও  জানার ইচ্ছে থাকে তাহলে  ছবিতে দেওয়া গীতাটি সংগ্রহ করে নিতে পারেন।   জয় গীতা।

No comments:

Ekadoshi

লক্ষ্মীপুর চন্দ্রগঞ্জ থানা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন

  চন্দ্রগঞ্জ  প্রতিনিধি : বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন...

চারবর্ণের অশৌচ ব্যবস্তা