বাঙালী ব্রাহ্মণদের ঐক্য গড়ে তোলা কি সম্ভব নয়! *******************************************
হ্যাঁ সম্ভব কেবলমাত্র আত্ম-সমালোচনার মাধ্যমে.
★আজকে প্রথম পর্ব★
আমরা বিগত কয়েক দশক ধরে ব্রাহ্মণ বর্ণসম্প্রদায়ের সিংহভাগ লোকই অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দিতে পারিতো নাই-ই বরং তার থেকেও বড় কথা হলো কোন ব্যক্তি বিশেষকে বা সমাজকে ছোট করতে আমরা খুব পছন্দ করি!!
অন্য ব্রাহ্মণ মানুষের চেয়ে বরং দুই কদম এগিয়েই থাকতে বরাবর ভালোবাসি, আর সেজন্যই আজ আমাদের ভেতর কোলাহল (বিবাদ)অন্য সব সম্প্রদায় থেকে অনেক বেশি।
আমাদের সমাজে কোন ব্যক্তি যদি তাঁর নিজস্ব মতামত দিতে নাই পারে তবে সেই ক্ষেত্রে আমরা নিজেদের কি করে হিন্দুদের বর্ণশ্রেষ্ঠ মানুষ ভাবি???
নিজেদের মনের সংকীর্ণতা যদি দূর করে অন্যের মতামত এর প্রাধান্য নাই দিতে পারি তবে আমরা ঠিক কোন অর্থে শ্রেষ্ঠ মানুষ হই ????
একটা কথার প্রেক্ষিতে একশো কথা উঠবেই তবে সেটা অবশ্যই গঠনমূলক আলোচনা করে সমাধান করা উচিত।
শুধুমাত্র নিজের বাহবা বা পরিচিতি বাড়ানোর জন্য যেই জিনিস সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণা নেই তা নিয়ে অহেতুক তর্ক করি, আজকাল আমরা সেই ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি ধাবিত হই।কেউ কিছু বললে সেটা বিচার বিবেচনা করে বা এতটুকু পড়াশোনা করে তারপর সেই ব্যাপারে সমালোচনা করুন, কেউ তো নিষেধ করে নি কিন্তু তারমানে এই নয় যে কেউ কিছু বলতেই পারবে না।কারো মতামত আপনার সাথে মিলতে নাই পারে তাতে কি খুব ক্ষতি হয়ে যাবে ????
আজকাল হ্যারিকেন দিয়ে খুঁজে সেই লোক পাওয়া যায় না, যে জানানোর জন্য আলোচনা করবে,যার থেকে আপনি কথা বলে বা আলোচনা করে কিছু শিখতে পারবেন।
বরং আপনি যদি কারো মতামত এর বিরুদ্ধে কথা বলেন,তবে আপনাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে দুই সেকেন্ড সময় নিবে না।আমাদের ব্রাহ্মণ সমাজের মধ্যে এই সমস্যাটা অনেক পুরানো আমরা কেউ কাওকে সহ্য করতে পারি না আর তাই শত্রুভাব কাজ করে বেশি যার কারনেই আজকে আমাদের সংখ্যাটা নিম্নমুখী!!!
নিজেকে জাহির করার প্রবণতা থাকা ভালো, তবে সেটা যেন মাত্রা অতিক্রম না করে সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত সবাইকে।
তবেই আমরা আমাদেরকে একত্রিত করতে পারবো।
আজ আমাদের কাছে বিবিধ সমস্যা...
সেগুলি সমাধানের নিমিত্ত আমরা খুব কমসংখ্যক মানুষ সাধ্যমত প্রচেষ্টা করছি।।
আপনারাও সুযোগ সুবিধা মতো আমাদের প্রচেষ্টা সফল করতে এগিয়ে আসুন, মনে রাখবেন একটা সামান্য বীজ থেকে প্রকান্ড বৃক্ষ জন্ম নেয় তাই আপনাদের একটা ক্ষুদ্রতম প্রচেষ্টাও নিজের সমাজের মানুষের কাছে বড় কিছু পুনরুদ্ধারে সফল হবেই।
কয়েকটি বর্তমান সময়ের ব্রাহ্মণ সমাজের কঠিন সমস্যা তুলে ধরতে চেস্টা করছি, যেগুলির হয়তো আমি আপনি সকলেই সম্মুখীন হয়েছি।।
১. ব্রাহ্মণদের প্রধান জীবিকা শাস্ত্রানুযায়ী যাজনিককর্ম, অধ্যাবসায় ইত্যাদি, কিন্তু বর্তমান দিনে আমাদের নিজের সংস্কৃতির কর্ম কয়জন সম্পাদিত করেন যারা করেন তারাও মুস্টিমেয় কিছু মানুষ, যদিও এমনিতেই আজ আমরা আমাদের অসংগঠিত মনোভাবের জন্য দেশের জনজাতির মধ্যে সম্ভবত ৪℅ বা লুপ্তপ্রায় সম্প্রদায়ের মধ্যে পড়ে গেছি, এটা কেউ অস্বীকার করতে পারেন না।
২.স্বাধীনতার পুর্ববর্তী সময়ে আমাদের বাংলায় বাঙালী ব্রাহ্মণরা সমাজে নানা কাজে নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অনুসরন করে নানা সমাজ সংস্কারক মুলক কর্ম সম্পাদিত করে গেছেন, তাদের নাম বর্তমানে আমরা ভুলে গেছি,তারা কি আজকের এই ছিন্নমুল ব্রাহ্মণ সমাজের জন্য সংগ্রাম করে গিয়েছিলেন,তারা বাংলার ইতিহাসে অমরত্ব লাভ করেছেন তাদের ধর্ম ও কর্মনিষ্ঠ জীবনের অবদানে।
আর আজ আমরা তাদের উত্তরসুরীরা কি করছি, সামান্য নিজের স্বার্থে নিজেদের সংস্কৃতি ও পিতৃপরিচয় হেয় করছি, আমরা ব্রাহ্মণরা সর্বদা নিজেদের সমালোচনায় জর্জরিত, কে কত বড় পন্ডিত, কে কত ধনী,কে কত মন্দ,কে কত লোভী,কে কত পাপী এই নিয়ে আমাদের সমাজ চলছে, এতে তো পতন অবশ্যম্ভাবী।
৩. আমাদের সমাজে যে সকল ব্রাহ্মণ গন নিজ দক্ষতার ওপর সমাজে নানা কর্মে প্রতিষ্ঠিত, তারাও কেউ কোনদিন নিজ বর্নের অপেক্ষাকৃত অনগ্রসর মানুষদের কর্মে প্রতিষ্ঠিত করতে এগিয়ে আসে না, বাস্তবতা এটাই, যার জন্য ব্রাহ্মণ কুলে জন্মে যদি নিজের সমাজের মানুষের জন্য সঙ্গতি থাকা স্বত্বেও সহায়তা করতে চেষ্টা করেন না, কেউ কেউ বলেন যে নিজের বর্ণের উপকার করার চাইতে একটা বিধর্মী বা সারমেয় প্রানীর উপকার করা ভালো কারন নিজের ঘরে সর্বদা বিভীষণ জন্মে 😢
৪.বিগত ও বর্তমান দিনে অনেক ব্রাহ্মণ গন দেশ পরিচালনার নানা কাজে নিযুক্ত রয়েছেন, তারাও কেউ কোনোদিন নিজ বর্নের মানুষের জন্য কোন বিশেষ শিক্ষা, কর্মসংস্থান, নিয়ে কোন প্রকার প্রচেষ্টা করেন নি, এগুলো কেউ অস্বীকার করতে পারেন না যার ফলশ্রুতিতে জেনেটিক ভাবেও ব্রাহ্মণ জাতি নিজের অস্তিত্বের চরম সংকটের মুহূর্তে।।।
No comments:
Post a Comment